বাংলার স্বাস্থ্য-ব্যবস্থার ভগ্নদশার জন্য দায়ী স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা

বাংলার স্বাস্থ্য-ব্যবস্থার ভগ্নদশার জন্য দায়ী স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা

দিদি প্রথম থেকেই করোনা মহামারীর ভয়াবহতাকে গুরুত্ব দেননি। আজ সেই জন্য বাংলার এই অবস্থা। সময়টা বছরের গোড়ার দিক থেকে ২ মার্চ পর্যন্ত, বাংলার নোভেল করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৮। সেই সময় মমতা বলেছিলেন "দিল্লির হিংসার দিক থেকে নজর ঘোরাতেই কেন্দ্রীয় সরকার মিডিয়াকে দিয়ে করোনা নিয়ে অযথা প্রচার শুরু করেছে, করোনা রগ ঠিকই, কিন্তু এটা নিয়ে প্যানিক করবেন না।" করোনা নিয়ন্ত্রনে কেন্দ্র সরকারের লকডাউন ঘোষণায় মমতার ঘোর আপত্তি ছিল প্রথম থেকেই। অবশ্য সমস্ত ক্রেডিট নিজের ঝুলিতে ভরার জন্য, বলা ভালো বাংলার মানুষের আইওয়াস করতে পরবর্তীকালে মমতার দাবি- তিনি নাকি প্রথম বাংলায় লকডাউন ঘোষণা করেছেন।

এবার জেনে নিন রাজ্যে প্রথম করোনা আক্রন্তের তথ্য-

আর কেও নয়, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ফেরত মমতার মন্ত্রীসভারই আমলার ছেলে প্রথম বাংলায় করোনা কে আমন্ত্রন করে। বিমানবন্দর থেকে এমআর বাঙুর হাসপাতাল, সবাই তাকে পরামর্শ দিয়েছিলেন বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল যাওয়ার জন্য। অথচ হাসপাতালে না গিয়ে তিনি শপিং মলে ঘুরে বেরান। ছেলে করোনা আক্রান্ত পুরো পরিবারের কোয়ারেন্টিন থাকা উচিত, কিন্তু তার মা নবান্নে গিয়েছেন , দায়িত্বজ্ঞানহীনের মতো আচরণ করেছেন। আর সেই জন্য বাংলায় বেরেছে করোনা আতঙ্ক! এর পর করোনা আক্রমণের গ্রাফটা ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী।

তার পর শুরু দিদির খেলা। ভারতের বেস্ট মুখ্যমন্ত্রী হতে গিয়ে তিনি যা যা করেছেন টা সত্যি ক্ষমার অযোগ্য। করোনার মৃত্যুর সংখ্যা লুকনো। ডেথ সার্টিফিকেটে অডিট কমিটি । ৩ এপ্রিল রাজ্যসরকারের বিশেষজ্ঞ কমিটি জানায়, রাজ্যে মৃতুর সংখ্যা ৭, তার কিছুক্ষণের মধ্যে অবশ্য সেই সংখ্যা বদলে যায় তিনে।

পার্থক্য আরও আছে--
রাজ্যের স্বাস্থ্যবুলেটিন আর কেন্দ্রের পাঠানো রিপোর্টে আকাশ পাতালের ফারাক। তথ্য লুকোতে দুদিন স্বাস্থ্য বুলেটিন ওয়েবসাইটে দেওয়া হল না।

যাদের মানুষ করোনা যোদ্ধা নামে চেনে- ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী কারও জন্য নেই পর্যাপ্ত সুরক্ষা। এই নিয়ে বিক্ষোভ হয়েছে। মমতা মিডিয়া কে চোখ রাঙিয়েছেন...। স্বাস্থ্য কর্মীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছে। কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সঙ্গে অসহযোগিতা করেছে। কেন্দ্রের পাঠানো পিপিই নিয়ে করেছে রঙের রাজনীতি।



করোনা আবহে দিদির রাজনীতির ইতিহাস আরও আছে। রাতের অন্ধকারে মৃত দেহ সৎকার। নবদ্বীপ থেকে বাঁকুড়া, তুলকালাম কাণ্ড। বাংলায় দিদি সুপারস্পেশিয়ালিটি হাসপাতাল বানিয়েছেন করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য। তবে, নমুনা দেখলে আঁতকে উঠবেন। আরজিকর হাসপাতালের ওয়াডে বিড়াল ঘুরে বেড়াচ্ছে। হাওড়া সত্যাবালা আইডি হাসপাতালে করোনা চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত পরিকাঠামোর অভাব। দিদির খাস ভোটব্যাঙ্ক লকডাউনকে পরিনত করেছে, দিদি চুপ থেকেছেন। তবলিগি জামাত ফেরত সদস্যরা পশ্চিমবঙ্গে এসে বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের হদিশ পেতে দিদির পুলিশের সময় লেগেছে অন্তহীন। এর ফলাফল কি হয়েছে সেটা সকলেই জানেন। বাংলায় বেড়েছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। বর্তমানে কোভিড হাসপাতালে মিলছে না শয্যা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা রোগীকে ফেলে রাখা হচ্ছে। কোভিড রোগীদের রাখা হচ্ছে মৃত দেহের পাশে। মর্গে মৃতদেহ স্তূপাকার। এমন কি হাসপাতালের বাথরুমে পর্যন্ত রাখা হয়েছে মৃতদেহ। বোলপুরে মর্গের এসি কাজ না করায়, দুর্গন্ধে রোগীরা অতিষ্ঠ। পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাওয়ায় দিদি দিশেহারা, পরামর্শ দিয়েছেন- যে যার নিজের দায়িত্বে বাড়িতে কোয়ারেন্টিনে থাকুন।

গড়িয়া, আমহারস্ট স্ট্রিট, গৌরিবাড়ি - মমতার রাজত্বে মহানগরী দেখেছে মৃতদেহকে অপমান করার চিত্র। কোথাও পচাগলা মৃতদেহকে আঁকশি দিয়ে টানা-হেঁচড়া করা হয়েছে, তো কোথাও ঘণ্টার পর ঘণ্টা করোনা রোগীর মৃতদেহ পড়ে থেকেছে।

সম্প্রতি দিদি নিজেকে করোনা যোদ্ধা উপমা দিয়েছেন। হ্যাঁ, তিনি করোনাযোদ্ধাই বটে, যিনি করোনাকে পাশবালিশ বানিয়ে ঘুমোতে বলেন, ডাক্তার দের পিপিই-র বদলে রেনকোট পরে চিকিৎসা করতে বলেন, পরামর্শ দেন, টোটকা বাতলে দেন- "দরজা জানালা খুলে রাখুন, ভাইরাস চলে যাবে"। সত্যি দিদি আপনি "বাংলার অনুপ্রেরণা" বটে। আপনি থাকতে সবই সম্ভব, শুধু বাংলাকে করোনামুক্ত করা অসম্ভব।

Share Now On Facebook
Click Here👇👇
close